সাভারে জমি লিখে দিতে মা-মেয়েকে তুলে নিয়ে মারধর

সাভারের আশুলিয়ায় সুদের টাকা পরিশোধ না করা ও এর পরিবর্তে জমি লিখে দিতে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে মা-মেয়েসহ নিকটাত্মীয়দের মারধরের অভিযোগ উঠেছে। দাদন ব্যবসায়ী সাবেক ছাত্রদল নেতা বিপ্লব মীর ও তার মা তাদের মারধর করেন বলে জানা গেছে।

সোমবার (১৪ মার্চ) সকালে আশুলিয়ার জামগড়ার উত্তর মীর বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুরে আশুলিয়া থানায় মামলা করতে গেলে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) নেয় পুলিশ।

সোমবার বিকেলে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শাহীন মিয়া।

এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন আশুলিয়ার জামগড়ার উত্তর মীর বাড়ি এলাকার মোহাম্মদ আলির ছেলে হাফিজুদ্দিন (৩২), নূর ইসলাম মোল্লার ছেলে সোহাগ মোল্লা (৩০), রিপা আক্তার (৩০) ও তার মা মনোয়ারা বেগম (৫৫)। তাদের মধ্যে রিপা আক্তারের স্বামী আবু সাঈদ দাদন ব্যবসায়ী শামীমার কাছ থেকে সাত লাখ টাকা সুদে নিয়েছিলেন।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন একই এলাকার মান্নান মীরের ছেলে থানা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য বিপ্লব মীর (৩০) ও তার মা শামীমা বেগম (৫০)।

ভুক্তভোগীরা বলেন, প্রায় আট বছর আগে ব্যবসার জন্য দাদন ব্যবসায়ী শামীমার কাছ থেকে সাত লাখ টাকা সুদে নেন রিপা আক্তারের স্বামী আবু সাঈদ। যার বিনিময়ে প্রতি মাসে ১৪ হাজার টাকা পরিশোধ করে আসছিলেন সাঈদ। তবে করোনা মহামারিতে ব্যবসায় ধস নামায় আর পাওনাদারের অত্যাচারে ১০ দিন আগে আত্মগোপনে যান আবু সাঈদ। পরে শামীমা ও তার ছেলে সাবেক যুবদল নেতা বিপ্লব মীর বাড়ির জমি লিখে দিতে রিপা আক্তার ও তার মা মনোয়ারাকে চাপ দিতে থাকেন।

রিপা আক্তার বলেন, কয়েক দিন আগে তাদের ১ লাখ টাকা দিয়ে বাকি টাকার জন্য সময় চান। কিন্তু হঠাৎ সকালে শামীমা তার ছেলে বিপ্লব মীরসহ অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জন লোক এসে আমার মা ও আমাকে তুলে নিয়ে একটি ঘরে আটকে রেখে মারধর করতে থাকে। খবর পেয়ে আমার নিকটাত্মীয়  হাফিজুদ্দিন ও সোহাগ মোল্লা ঘটনাস্থলে এসে আমাদের খোঁজ করেন। এ সময় শামীমা ও তার ছেলে বিপ্লব মীরসহ ১০ থেকে ১২ জন আমাদের বেধড়ক মারধর করে। পরে আমাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আমাদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

এদিকে মারধরে অবস্থার অবনতি হলে হাফিজুদ্দিনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এ ব্যাপারে ছাত্রদল নেতা বিপ্লব মীর বলেন, আমি কাউকে মারধর করিনি। বরং তারাই আমার মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আর আটকে রেখে মারধরের তো প্রশ্নই আসে না।

আশুলিয়া থানার সহকারী উপপরির্দশক (এএসআই) শাহীন মিয়া বলেন, উভয় পক্ষই থানায় এসেছিল। তাদের দুপক্ষরই তদন্তের দায়িত্ব আমার ওপর পড়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন